বর্তমানে যারা বিজ্ঞানের কর্নধার তাদের বেশীরভাগই নাস্তিক তাই সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে অনেকেই সত্যের কাছাকাছি থিউরী প্রদান করলেও সেসব থিউরীকে হাইলাইট না করে বরং আরও চাপা দেয়া হয় আর যদি কেউ এমনভাবে থিউরী দেয় যে মহাবিশ্ব সৃষ্টির মূলে কোন ঈশ্বরের ভূমিকা নেই তবে তার থিউরী যতই কম সত্য হোক না কেন, উক্ত থিউরীকে শুধু হাইলাইট করেই তারা ক্ষান্ত হবে না বরং তাকে নোবেল প্রাইজেও ভূষিত করবে। কিন্তু যতকিছুই হোক না কেন সত্য কখনও চাপা থাকে না তাই বর্তমানে ফিজিক্স আরো উন্নত হওয়ায় অনেক থিউরীই সত্যের কাছাকাছি হওয়া সত্তেও তা বিজ্ঞান মহলে স্থান পেতে শুরু করেছে যেমন- তারা ল্যাবেই প্রমান করেছে যে একদম শুন্য হতেই সবকিছু সৃষ্টি সম্ভব যদিও এই শুন্যতা একেবারেই সত্যিকারের শুন্য বলতে আমরা যা বুঝি তা নয় বরং পরস্পর বিপরীতমুখী সমপরিমান শক্তি কাছাকাছি আসার পর তারা শুন্যতায় পৌছে আর এই ধরনের শুন্যাবস্থা হতেই আবারও সৃষ্টি হয় শক্তি,ভর,পদার্থ । এখানে আরো বড় ধরনের আশ্চর্যের বিষয় হল এই থিউরী প্রমান করার পরও নাস্তিক বিজ্ঞানীরা মনে করছে যেহেতু শুন্য হতেই সবকিছুই সৃষ্টি হয়েছে তাই এমনি এমনিই এই বিশ্বজগৎ সৃষ্টি হয়েছে অর্থাৎ এখানে ঈশ্বরের কোন ভূমিকাই প্রমান হল না, তারা এমনি বোকা যে এটুকু বুঝল না- পরীক্ষাগারে যারা এই পরীক্ষা চালাল তাদের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছাড়া কি ঐ ধরনের শুন্যতায় আনা সম্ভব হয়েছে? আবার যখন শুন্যাবস্থা হতে আবারও সৃষ্টি হওয়া পর্যবেক্ষন করতে হয়েছে তখনও দেখা যাবে শক্তির নিজস্ব সামর্থের বাইরেও অনেক প্রভাবককে কাজ করাতে হয়েছে যাদের সরাসরি হস্তক্ষেপে আবারও শুন্য হতে সৃষ্টি সম্ভব হয়েছে নয়ত ঐভাবে শুন্য অবস্থাতেই থাকত, যদিও ভিতরে ভিতরে তাদের মাঝে অনেক কিছু ঘটতে দেখা যাক না কেন তারা কিছুতেই শুন্য অবস্থা হতে ফেরত আসত না, ওভাবেই থাকত আর ভিতরে ভিতরে যেসব কাজ পর্যবেক্ষনে ধরা পরেছে সেগুলো আসলে এমন কিছু কর্ম যা তাদেরকে সর্বদাই শুন্যবস্থায় থাকার জন্য পৌনঃপুনিক এক ধরনের প্রক্রিয়া চলমান ছিল অর্থাৎ বাহ্যিক কোন প্রভাব ছাড়া তাদেরকে যেমন শুন্য অবস্থায় পৌছানো সম্ভব নয় ঠিক একইভাবে শুন্য অবস্থা হতেও ফেরত আনা সম্ভব নয় আর এই বাহ্যিক প্রভাবটাই স্বয়ং ঈশ্বর করে থাকেন যা নাস্তিকদের এক চোখ দিয়ে শুধুমাত্র বস্তুবাদী চিন্তাধারার মাঝে নিজেদেরকে বদ্ধ রেখে কিছুতেই বুঝা সম্ভব নয়। এজন্য প্রকৃত সত্য খুজে পেতে প্রতিটা নাস্তিকেরই উচিৎ মুক্তচিন্তার নামে বদ্ধচিন্তা পেছনে ফেলে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে সবকিছু যাচাই বাছাই করা। মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ বলে যে- তিনি শুন্য হতেই সবকিছু তৈরী করেন। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা প্রমান করেছে যে শুন্য হতেই সবকিছুর সৃষ্টি সম্ভব। আল্লাহ সুবহানাতায়লা আবারও সবকিছু ধংস করে যখন ৪০টি সময়ের পর্যায় পর্যন্ত একাই থাকবেন তখনও সকল সৃষ্টি এভাবেই পরস্পরের সাথে একাকার হয়ে শুন্যাবস্থায় থাকবে শুধু তাই নয় তিনি সৃষ্টি জগত তৈরীর পূর্বেও এরকম সকল শক্তি শুন্যাবস্থায় রেখেছিলেন অর্থাৎ শক্তি ছিল কিন্তু সেসব শক্তির কোন সমর্থ ছিল না, তিনিই তাদের সমর্থবান বানালেন আর তারা রুপান্তরিত হয়ে গেল বিভিন্ন সৃষ্টিতে, বর্তমানে বিজ্ঞানীরা যেটা প্রমান করেছে তা হল ঈশ্বর সম্পূর্ন একা থাকাবস্থায় সৃষ্টিগুলো কিরুপে(শুন্যাবস্থায়) থাকে অনেকটা তাই। আর এসব শক্তিগুলো ঈশ্বরের এক ধরনের চিন্তার মত একটি ব্যাপার অর্থাৎ সমস্ত এনার্জিই হল ঈশ্বরের এক ধরনের কল্পনা বা ভাবনা যার দ্বারা তিনি ইচ্ছেমত সৃষ্টির বিভিন্ন রুপ দেন। আবার এসব এনার্জি বা শক্তিগুলো যেহেতু শুন্যতায় পৌছে বিনাশ হয়ে যায় তাই এগুলোকে অবিনশ্বর ভাবাও বোকামী হবে, তাই এটাই প্রমান হয় যে একমাত্র ঈশ্বরই শুধুমাত্র অবিনশ্বর কিন্তু তার চিন্তা বা কল্পনাগুলো নয় সুতারাং নাস্তিকদের এই ধরনের শিরকী বিশ্বাস মহাবিশ্ব/এনার্জী হল অবিনশ্বর তা সম্পূর্নই ভুল কেননা এনার্জীগুলোকে কেউ শুন্যতা হতে না ফিরিয়ে আনলে তারা এভাবেই অনন্তকাল থাকবে পরস্পরের সাথে বিনাশ হয়ে। বিজ্ঞানীদের এই আবিস্কারের মাধ্যমে এটাও জানা যাচ্ছে যে সমস্ত সৃষ্টিই স্রষ্টার সাথে এমনভাবে সম্পর্কযুক্ত যেভাবে পূর্বে অনেক আস্তিকরাও ভাবেনি অর্থাৎ ঈশ্বরের সাথে সমস্ত সৃষ্টির সম্পর্ক অনেকটাই এমন যেভাবে একজন ব্যাক্তির সাথে তার মস্তিস্কের মাঝে মনের কল্পনাজগতের সম্পর্ক অর্থাৎ আমরা সবাই তাঁর কল্পনার ভিতরে বেঁচে আছি বা তাঁরই কল্পনার ফসল। তারমানে সৃষ্টি কখনও স্পর্শ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে ঈশ্বরের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না এমনকি ঈশ্বর দেখতে কেমন তা কল্পনায় আনতেও ব্যার্থ। এই ধরনের কথা অবশ্য দ্য গ্রান্ড ডিজাইন বইয়েও স্বিকার করা হয়েছে যে আমরা সবাই অতিবুদ্ধিমান প্রানীর স্বপ্ন বা সেকেন্ড লাইফ অনেকটা বর্তমানের মানুষগুলো যেভাবে অনলাইন দুনিয়ায় সেকেন্ড লাইফ ভোগ করে এমনকি এক্ষেত্রে হলিউডের “ম্যাট্রিক্স” চলচিত্রের ব্যাপারটাও উদাহরন হিসেবে দেয়া হয়। তারমানে হল হকিং বুঝাতে চেয়েছে আমাদের এই বিশ্বজগত হয়ত খুবই বুদ্ধিমান কিছু এলিয়েনরা তৈরী করেছে আর সে যা বুঝিয়েছে হলিউডের “থর” মুভিতেও মানুষের ব্রেইন ওয়াশ করার জন্য অনেকটা তাই বুঝানো হয়েছে। বর্তমান বিজ্ঞান আমাদের ঘুরেফিরে শয়তানের চক্রান্তে সেই আদিম যুগের মানুষেদের মত দেবতাদের বা এলিয়েনদেরই স্রষ্টা, ঈশ্বর ইত্যাদি মানতে বাধ্য করছে আর যদি কোন বিজ্ঞানী মহাবিশ্ব সৃষ্টি একজন ঈশ্বরই করেছেন এমন থিউরী বা এর কাছাকাছি থিউরীও প্রদান করে তবে সেসব থিউরীকে হাইলাইট না করে বরং আরও ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে।